একসঙ্গে সাঈদ আনোয়ার-আমির সোহেল

মাঠে পার্টনার, মাঠের বাইরেও

উৎপল শুভ্র

১৯ এপ্রিল ২০২১

মাঠে পার্টনার, মাঠের বাইরেও

সাঈদ আনোয়ার ও আমির সোহেল

তখন তাঁরা দুজন তর্কযোগ্যভাবে বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা ওপেনিং জুটি। এই দুজনকে একসঙ্গে বসিয়ে ইন্টারভিউটা অবশ্যই নেহাতই ঘটনাচক্রে। কলম্বোর তাজ সমুদ্র হোটেলে সাঈদ আনোয়ারের রুমে বসে অপেক্ষা করছি। আনোয়ারের শেভ করা শেষ হলেই শুরু হবে ইন্টারভিউ। এমন সময় আমির সোহেল কী একটা ম্যাগাজিন খুঁজতে রুমে ঢুকলেন। যাঁকে দেখেই আমার মনে হলো, দুজনকে একসঙ্গে বসিয়ে ইন্টারভিউ করলে তো আরও ভালো হয়। বলতেই রাজি, দুজন খুব ভালো বন্ধু বলে ইন্টারভিউটাও হয়েছিল দারুণ।

প্রথম প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ১৯৯৪। ভোরের কাগজ।

উৎপল শুভ্র: শুরুতে আপনারা একে অন্যের সম্পর্কে বলুন। কেমন লাগে একসঙ্গে ব্যাট করতে?

সাঈদ আনােয়ার: আমরা একসঙ্গে নিয়মিত ওপেন করছি খুব বেশিদিন হয়নি। সোহেলের সঙ্গে ব্যাটিং করাটা দারুণ একটা ব্যাপার। আমাদের দুজনের একটা ব্যাপারে মিল আছে, আমরা দুজনেই স্ট্রোক প্লেয়ার। গত এক বছর ধরে আমরা দুজনই ভালাে ফর্মে আছি। যদি সে একটা চার মারে, সঙ্গে সঙ্গে আমিও একটা মারার চেষ্টা করি। তাই একটা প্রতিযােগিতা আছে আমাদের মধ্যে। তবে কিছুদিন আগে আমরা সিদ্ধান্ত নেই; যদি একদিন কেউ খুব ভালাে খেলতে থাকে, তাহলে অন্যজন উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করব। আমি এখনাে মনে করি না, আমরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি। আমাদের আরও রান প্রয়ােজন। তবে এটা বলব, ওর সঙ্গে খেলাটা সত্যিই দুর্দান্ত একটা ব্যাপার। 

আমির সােহেল: আমারও আসলে একই কথা। আমরা প্রথম ওপেন করি ১৯৯০ সালে, যখন আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হই। তখন সাঈদ আমাকে দারুণ সাহায্য করেছে। বারবার বলেছে, 'কোনাে চাপ অনুভব কোরাে না। মনে করাে, একটা ক্লাব ম্যাচ খেলছ। আমরা সম্ভবত দুটি টুর্নামেন্টে একসঙ্গে খেললাম, তারপর হয় আমি, নয়তাে ও অনিয়মিত হয়ে পড়ল দলে। অবশেষে ১৯৯৩ সালে আবার আমরা ফিরে এলাম একসঙ্গে। তারপর থেকে সাঈদ দারুণ ফর্মে আছে, আমি তো বলব, বােলাররা রীতিমতাে বিপদেই আছে ওকে নিয়ে। খেলার মধ্যেও আমাদের ভিন্ন একটা খেলা আছে, সে যদি ৫০ করে তো আমি করব ৬০– এই প্রতিযােগিতা। সে যদি দুটি চার মারে, আমি মারব তিনটি। তবে আনােয়ার যা বলল, পরে আমরা আলাপ করে ঠিক করি, যদি কোনােদিন ও বেশি ভাল খেলতে থাকে, তাহলে ওকেই বেশি স্ট্রাইক দেব, আমি খেলব সিঙ্গেলসের ওপর। আমার ক্ষেত্রেও একই কথা। এখন পর্যন্ত আমরা ভালােই করেছি। আসলে এটা পারস্পরিক বােঝাপড়ার ব্যাপার। যদি আমি কোনাে ভুল করি, তাহলে সে এসে বলে, 'এটা করাে না, সাবধান!' সে যদি ভুল করে, আমি বলি। এমনকি আমরা সিঙ্গেল নেওয়ার জন্য এখন কলও করি না, এমনিতেই দৌড়াই। এতটাই আন্ডারস্ট্যান্ডিং আছে আমাদের মধ্যে।

শুভ্র: ব্যাটিং করার সময় সাধারণত কী কথা হয় আপনাদের মধ্যে?

সাঈদ আনােয়ার: (হাসি) ' অ্যাই, এত বেশি চার মারিস্ না'– এই কথাটাই বেশি হয়। তবে সাধারণত আমরা বলি, 'এমন ঝুঁকি নিও না', 'উইকেট থাকো' ইত্যাদি। কোনােদিন হয়তাে আমি চাপের মধ্যে থাকলাম, কিন্তু আমিরের কারণে তা সহজ হয়ে যায়। সে একটা বা দুটি চার মেরে চাঙা করে দেয় আমাকে। যে ঘটনা ঘটল গত বছর (১৯৯৩ সালে) শারজা কাপ ফাইনালে। প্রথম ম্যাচে আমি শুরু থেকেই বল মিডল করছিলাম, কিন্তু আমির ভালাে অবস্থায় ছিল না। ও তাই টিকে থেকে দারুণ ধৈর্যশীল একটি ইনিংস খেলল। উল্টো ঘটনা ঘটলাে ফাইনালে। আমি খুব ভালো খেলতে পারছিলাম না, কিন্তু আমির খেলছিল দারুণ। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমার মনে হয়, আমিরের মতাে একজন ব্যাটসম্যানের সঙ্গে না খেললে আমার খুব সমস্যা হতাে। কারণ দেখা যেত, যেদিন আমার খারাপ দিন, সেদিন স্কোরবাের্ডে রানই উঠছে না।

আমির সােহেল: সাঈদই তাে বলে দিল সব। কথা আসলে এটাই, আমরা পরস্পরকে খুব সাহায্য করি।

সাঈদ আনোয়ার-আমির সোহেল: মাঠের দুই ওপেনিং পার্টনার মাঠের বাইরেও ছিলেন খুব ভালো বন্ধু

শুভ্র: মহসিন-মুদাসসর জুটির পর পাকিস্তান ভালাে ও দীর্ঘস্থায়ী কোনাে ওপেনিং জুটি পায়নি। আপনাদের মাধ্যমে অবশেষে কি তা পেল?

সাঈদ আনােয়ার: আসলে আমাদেরকে আরও অনেক খেলতে হবে। কারণ মহসিন ও মুদাসসর খেলেছেন দীর্ঘদিন, আর আমরা মাত্র দু-এক বছর ধরে খেলছি। আমাদের এখনাে অনেক কিছু প্রমাণ করতে হবে। তবে আমাদের প্লাস পয়েন্ট হলাে, আমরা দুজনই স্ট্রোক প্লেয়ার। দুজনই মেরে খেলতে ভালােবাসি এবং এটা পরস্পরের জন্যে উদ্দীপকের কাজ করে।

আমির সােহেল: আমিও একই কথা বলব। মহসিন ও মুদাসসর ছয় বছর খেলেছে একসঙ্গে এবং তাঁদের পারফরম্যান্সও ছিল ভালাে। আমরা খেলছি মাত্র এক বছর, আমার মনে হয় আরও এক বছর খেলার পর বুঝতে পারব, আমাদের অবস্থানটা কী! এখন পর্যন্ত ওর সঙ্গে আমার ব্যাটিং করাটা খুব সহজ হয়েছে, কারণ সাঈদ একাই বােলারদের দফারফা করে দিচ্ছে। আমার কাজ অনেক সহজ হয়ে গেছে এতে, শুধু এক-দুই রানের জন্য কনসেনট্রেট করলেই চলছে। যদি লােকজন আমাদেরকে মহসিন-মুদাসসরের চেয়ে ভালাে ওপেনিং পেয়ার হিসেবে বলাবলি শুরু করে থাকে, তাহলে আমি বলব, তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ করতে কমপক্ষে আরও এক বছর আমাদেরকে এভাবে খেলে যেতে হবে।

শুভ্র: সােহেল, আপনি এক-দুই রান নেয়ার কথা বলছিলেন। একটা অভিযোগ কিন্তু আছে, সাঈদ আনােয়ারের সঙ্গে জুটি বাঁধার পর আপনি আগের চেয়ে অনেক রক্ষণাত্মক হয়ে গেছেন।

সাঈদ আনােয়ার; না, না এটা ঠিক নয়। আসলে আমি ক্রিকেট বুকের বাইরের অনেক শট খেলি। অন্যদিকে, আমির মূলত ক্রিকেটের শটই খেলে থাকে। কিন্তু আপনি কি কখনাে ওকে কোনাে লুজ বল ছেড়ে দিতে দেখেছেন? আসলে আমার মতাে আমিরও ন্যাচারাল স্ট্রোকমেকার। তাছাড়া আমাদের রানেও আপনি খুব একটা পার্থক্য দেখবেন না।

সাঈদ আনোয়ারের ব্যাটিংয়ে ছিল বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের সহজাত সৌন্দর্য

শুভ্র: এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোন ওপেনিং বােলার সবচেয়ে বেশি সমস্যায় ফেলেছে আপনাদের?

সাঈদ আনােয়ার: আসলে আপনি যদি ওপেন করতে নামেন এবং সেটা পুরাে নিষ্প্রাণ উইকেটও হয়, তারপরও নতুন বলে বােলাররা কিছু না কিছু করেই। এ পর্যন্ত আমি যেসব বােলারদের খেলেছি, তাদের মধ্যে সেরা মনে করি কোর্টনি ওয়ালশকে। সে খুব কুইক। ভুল বললাম, আসলে সে ততটা কুইক নয়, তবে দারুণ বুদ্ধিমান বােলার। আমি মনে করি, আমাদের বােলারদের অর্থাৎ ওয়াসিম ও ওয়াকারকে বাদ দিলে ওয়ালশই সেরা।

আমির সােহেল: আমি বলব না যে, কোনাে বােলার আমাদের সমস্যায় ফেলেছে। তবে সাঈদের সঙ্গে আমি ওয়ালশের ব্যাপারে একমত। সে খুব দ্রুত ব্যাটসম্যানের দুর্বলতা আবিষ্কার করে ফেলতে পারে। যদি সে দেখে, ব্যাটসম্যান শর্ট পিচ বল খেলতে পারছে না, তাহলে সে একের পর এক শর্ট পিচ বলই দিয়ে যাবে। যদি দেখে ব্যাটসম্যানের পা বলের লাইনে যাচ্ছে না, একই জায়গায় বল ফেলে যাবে। সে খুবই বুদ্ধিমান। ওয়ালশ বাদে আমি বলব, অ্যালান ডােনাল্ড ইজ গুড। আসলে ওপেনারদের জন্য কাজটা সবসময়ই কঠিন। যদি আপনি অস্বীকৃত একজন বােলারকেও নতুন বল দিয়ে বােলিং করে যেতে বলেন, সে-ও কিছু না কিছু করতে পারবে। কাজেই শুরুতে সব বােলারকেই সমীহ করে খেলতে হয়, তবে আমর মতে কোর্টনি ওয়ালশই সেরা।

শুভ্র: আপনারা একে অন্যের বিশেষ কোনাে শটের কথা মনে করতে পারেন, যা এখনাে স্মরণীয় হয়ে আছে?

সাঈদ আনােয়ার: আমি নির্দিষ্ট কোনাে শটের কথা বলব না। যেটির কথা বলব, তা আমির সবসময়ই খেলে । আপকামিং বল, যা ড্রাইভ করার মতাে হাফ ভলি নয় বা কাট করার মতাে শর্ট পিচও নয় ,সেই বল ও নিয়মিত কাভার বাউন্ডারিতে পাঠায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর কাউকে আমি এমন খেলতে দেখিনি। এটা রীতিমতাে বিস্ময়কর। আমি তো ভেবেই পাই না, হাফ ভলিও নয়, শর্টও নয়, এমন বল ও কীভাবে অন দ্য আপ বাউন্ডারিতে পাঠায়। এটাই ওর সেরা শট এবং এই শট বােলারদের একেবারে হতােদ্যম করে দেয়। কারণ এটা খারাপ বল নয়, অথচ বোলার দেখছে, ব্যাটসম্যান বাউন্ডারি মেরে দিচ্ছে!

আমির সােহেল: গত অস্ট্রেলেশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে এই শটটি খেলেছিল সাঈদ। শ্রীনাথের অফ স্টfম্পের বাইরের একটি বল ফ্লিক করে উইকেটকিপারকে ফাঁকি দিয়ে ফাইন লেগ বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছিল ও। আমি এখনাে বিশ্বাস করতে পারি না, নতুন বলে কীভাবে এই শট খেলা সম্ভব!

আমির সোহেলের এই শটটার কথাই বিশেষভাবে বলেছিলেন সাঈদ আনোয়ার

শুভ্র: আপনাদের সামনে বিশেষ কোনাে টার্গেট আছে? ব্যক্তিগত ল্যান্ডমার্ক নয়, পার্টনারশিপের রেকর্ডের কথা বলছি।

আমির সােহেল: আমরা এখনাে কোনাে রেকর্ড গড়িনি। তবে আমি যা মনে করি, আমার মতো সাঈদও মনে করে, আমরা যতদিন পাকিস্তানকে ভালাে স্টার্ট দিয়ে যেতে পারব, সন্তুষ্ট থাকব তাতেই। কারণ জানি, আমরা ভালাে স্টার্ট করতে পারলে আমাদের দল জিতবে। অন্য ব্যাটসম্যানদের কাজও খুব সহজ হয়ে যাবে তখন। তাই ভালাে একটা স্টার্ট করে দেওয়াটাই আমার একমাত্র চিন্তা, রেকর্ড-টেকর্ড নয়। তাছাড়া আমি কখনােই রেকর্ড নিয়ে ভাবার মতাে ক্রিকেটার নই।

সাঈদ আনােয়ার: আমিও রেকর্ড নিয়ে ভাবি না। কারণ রেকর্ড গড়া যায় না, এটা হয়ে যায়। যেমন হচ্ছে ব্রায়ান লারার। আমরা যখন ব্যাটিং করতে যাই, একটাই চিন্তা থাকে, ভালাে একটা স্টার্ট করতে হবে। ওয়ানডেতে যত দ্রুত সম্ভব রান তুলতে হবে। বিপক্ষ দল যদি ভালাে ওপেন করে, তাহলে তাদের জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কিন্তু আল্লার রহমতে আমি অথবা আমির অসংখ্যবার প্রতিপক্ষের হাত থেকে সেরকম ম্যাচ ছিনিয়ে এনেছি।

শুভ্র: সাঈদ, এই মাত্র আপনি লারার কথা বললেন। লারার মতাে আপনারা দুজনও বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। লারা সম্পর্কে আপনাদের মন্তব্যটা জানতে চাইছি।

সাঈদ আনােয়ার: কোনাে সন্দেহ নেই, সে একজন ব্রিলিয়ান্ট প্লেয়ার। সবকিছুই আছে ওর-- শটস, টেকনিক, টাইমিং, ফুট ওয়ার্ক, একজন ব্যাটসম্যানের যা যা থাকা সম্ভব। তবে আমি মার্টিন ক্রোর দারুণ ভক্ত। সে হয়তাে এত রেকর্ড করেনি কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর মতাে অন্য কেউ খেলতে পারে বলে আমি মনে করি না। আমার ধারণা, আপনি আমিরকে জিজ্ঞেস করলে সে-ও একই কথা বলবে। মার্টিন ক্রো এত সময় পায় শট খেলতে, ফাস্ট বােলিং নিয়ে সমস্যা নেই, শর্ট পিচ বােলিংও তার কাছে কোনাে ব্যাপার নয়। যে কোনাে ধরনের বােলিংয়ের বিপক্ষে, যে কোনাে পিচে, আমি মনে করি মার্টিন ক্রো-ই বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান।

আমির সােহেল: আসলে লারা এতসব রেকর্ড করেছে যে, এখন ও কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছে। কেউ যদি এত বেশি রান করতে পারে, তাহলে সে অবশ্যই ভালাে ব্যাটসম্যান। তাই আমি শুধু এটুকুই বলব, লারা একজন ব্রিলিয়ান্ট প্লেয়ার।

ওয়ানডের সাঈদ আনোয়ার এক সময় সেঞ্চুরির সংখ্যায় পাল্লা দিয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে

শুভ্র: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলা আপনার সেরা ইনিংস মনে করেন কোনটিকে?

সাঈদ আনােয়ার: আমি টেস্ট ক্রিকেট বেশি খেলিনি। তাই সেখান থেকে ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস বেছে নেয়াটা কঠিন। আমি বরং অস্ট্রেলিয়ায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমার প্রথম ওয়ানডে হান্ড্রেড, ১২৬ রানের ইনিংসটির কথাই বলব।

আমির সােহেল: ১৯৯২ সালে ইংল্যান্ড সফরে লর্ডসে ৭৪ রান। সে সিরিজেই বার্মিংহামে আমার ডেব্যু হয়। আমি বেশি রান করতে পারিনি সেখানে, মাত্র ১৮ রানে আউট হয়ে যাই। লর্ডসে পরবর্তী ম্যাচে তাই দারুণ চাপ ছিল আমার ওপর, কারণ শােয়েব মােহাম্মদ বসে ছিল বাইরে। উইকেট ছিল দারুণ সিমিং, ইংল্যান্ড এক শর কিছু বেশি রানে অলআউট হয়ে গেল। এরপর আমরা ব্যাটিং করতে নামলাম। আমার কিছু রান পাওয়াটা ছিল খুব জরুরি, তাই খুব সাবধানে খেলছিলাম। বল দারুণ সুইং করছিল, তার মধ্যে আমি ৭৪ রান করি। এটিই এখন পর্যন্ত আমার ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস।

শুভ্র: শেষ প্রশ্ন, মাঠের বাইরে আপনাদের সম্পর্ক কেমন? মিল আছে আপনাদের আচার-আচরণে?

সাঈদ আনােয়ার: মাঠের বাইরেও আমাদের সম্পর্ক চমৎকার। প্রায় প্রতিদিনই আমরা একসঙ্গে বাইরে যাই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করার আগে আমি আমিরকে চিনতাম না। কিন্তু এরপর থেকে আমরা খুব ভালাে বন্ধু। এমনকি যখন আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলি না, তখনও নিয়মিত দেখা হয় আমাদের।

আমির সােহেল: আমারও একই কথা। সাঈদের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়, যখন ১৯৮৯-৯০ সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম পাকিস্তান দলে ডাক পাই আমি। আমরা ছিলাম রুমমেট। তাই শুরুতেই আমাদের খাতির হয়ে যায়। আলাপ করে দেখা গেল, ওর আর আমার রুচি একইরকম। আমরা একই ধরনের মিউজিক পছন্দ করি, একই ধরনের পোশাকও। সে যদি কিছু কেনে, আমিও সেটাই কিনি। আমি যদি কিছু কিনি, সে-ও কেনে তাই। অনেক কিছুই শেয়ার করি ওর সঙ্গে (সাঈদ আনােয়ারের গায়ে ছিল আমির সােহেলের শার্ট, সেটা দেখিয়ে একসঙ্গে হেসে উঠলেন দুজন), একসঙ্গে খেতে যাই, একসঙ্গে সিনেমা দেখি। আমরা খুব ভালাে বন্ধু।

আরও পড়ুন......
ক্রিকেট, জীবন–সবই অন্য চোখে দেখছেন সাঈদ আনোয়ার
একসঙ্গে সাঈদ আনোয়ার-আমির সোহেল
সাঈদ আনোয়ার-আমির সোহেল: ইন্টারভিউয়ে যা লেখা হয়নি
রশিদ লতিফের জবানিতে ব্যাটসম্যান ও মানুষ সাঈদ আনোয়ার
সাঈদ আনোয়ার: অন্তত সেদিনের ‘বেস্ট

 

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ
আপনার মন্তব্য
আরও পড়ুন
×